সা-দ

৮৮ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
৬১ ) তারপর তারা বলবে, “হে আমাদের রব! যে ব্যক্তি আমাদের এ পরিণতিতে পৌঁছবার ব্যবস্থা করেছে তাকে দোজখে দ্বিগুণ শাস্তি দাও।”
قَالُوا۟ رَبَّنَا مَن قَدَّمَ لَنَا هَٰذَا فَزِدْهُ عَذَابًا ضِعْفًا فِى ٱلنَّارِ ٦١
৬২ ) আর তারা পরস্পর বলাবলি করবে, কি ব্যাপার, আমরা তাদেরকে কোথাও দেখছি না, যাদেরকে আমরা দুনিয়ায় খারাপ মনে করতাম? ৫৫
وَقَالُوا۟ مَا لَنَا لَا نَرَىٰ رِجَالًا كُنَّا نَعُدُّهُم مِّنَ ٱلْأَشْرَارِ ٦٢
৬৩ ) আমরা কি অযথা তাদেরকে বিদ্রূপের পাত্র বানিয়ে নিয়েছিলাম অথবা তারা কোথাও দৃষ্টি অগোচরে আছে?”
أَتَّخَذْنَٰهُمْ سِخْرِيًّا أَمْ زَاغَتْ عَنْهُمُ ٱلْأَبْصَٰرُ ٦٣
৬৪ ) অবশ্যই একথা সত্য, দোজখবাসীদের মধ্যে এসব বিবাদ হবে।
إِنَّ ذَٰلِكَ لَحَقٌّ تَخَاصُمُ أَهْلِ ٱلنَّارِ ٦٤
৬৫ ) হে নবী! ৫৬ এদেরকে বলো, “আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র। ৫৭ আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই। তিনি একক, সবার ওপর আধিপত্যশীল,
قُلْ إِنَّمَآ أَنَا۠ مُنذِرٌ وَمَا مِنْ إِلَٰهٍ إِلَّا ٱللَّهُ ٱلْوَٰحِدُ ٱلْقَهَّارُ ٦٥
৬৬ ) আকাশ ও পৃথিবীর মালিক এবং এ দু’য়ের মধ্যে অবস্থানকারী সমস্ত জিনিসের মালিক, পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল।”
رَبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ٱلْعَزِيزُ ٱلْغَفَّٰرُ ٦٦
৬৭ ) এদেরকে বলো, “এটি একটি মহাসংবাদ,
قُلْ هُوَ نَبَؤٌا۟ عَظِيمٌ ٦٧
৬৮ ) যা শুনে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও।” ৫৮
أَنتُمْ عَنْهُ مُعْرِضُونَ ٦٨
৬৯ ) (এদেরকে বলো) “ঊর্ধ্বলোকে যখন বিতর্ক হচ্ছিল সে সময়ের কোন জ্ঞান আমার ছিল না।
مَا كَانَ لِىَ مِنْ عِلْمٍۭ بِٱلْمَلَإِ ٱلْأَعْلَىٰٓ إِذْ يَخْتَصِمُونَ ٦٩
৭০ ) আমাকে তো অহীর মাধ্যমে একথাগুলো এজন্য জানিয়ে দেয়া হয় যে আমি সুস্পষ্ট সতর্ককারী।”
إِن يُوحَىٰٓ إِلَىَّ إِلَّآ أَنَّمَآ أَنَا۠ نَذِيرٌ مُّبِينٌ ٧٠
৫৫.
এখানে এমন মু’মিনদের কথা বলা হয়েছে, যাদেরকে এ কাফেররা দুনিয়ায় খারাপ ভাবতো। এর অর্থ হচ্ছে, তারা অবাক হয়ে চারদিকে দেখতে থাকবে। ভাবতে থাকবে, এ জাহান্নামে তো আমরা ও আমাদের নেতারা সবাই আছি কিন্তু দুনিয়ায় আমরা যাদের দুর্নাম গাইতাম এবং আল্লাহ, রসূল, আখেরাতের কথা বলার কারণে আমাদের মজলিসে যাদেরকে বিদ্রূপ করা হতো তাদের নাম নিশানাও তো এখানে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
৫৬.
শুরুতে যে বিষয়বস্তুর ওপর ভাষণ শুরু হয়েছিল এখন বক্তব্য আবার সেদিকে মোড় নিচ্ছে। এ অংশটি পড়ার সময় প্রথম রুকূ’র সাথে তুলনামূলক অধ্যয়নও করতে থাকুন। এভাবে বক্তব্য পুরোপুরি অনুধাবন করা সম্ভব হবে।
৫৭.
৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছিল, এদের মধ্য থেকেই একজন সতর্ককারীর উত্থান ঘটায় এরা বড়ই বিস্ময় প্রকাশ করছে। এখানে বলা হচ্ছে, এদেরকে বলো, আমার কাজ হচ্ছে কেবলমাত্র তোমাদেরকে সতর্ক করে দেয়া। অর্থাৎ আমি কোন ফৌজদার বা সেনাধ্যক্ষ নই যে, জবরদস্তি তোমাদেরকে ভুল পথ থেকে সরিয়ে সঠিক পথে টেনে আনবো। আমি বুঝাবার ফলে যদি তোমরা না বুঝো তাহলে নিজেদেরই ক্ষতি করবে। বেখবর থাকাটাই যদি তোমাদের কাছে পছন্দনীয় হয়ে থাকে তাহলে নিজেদের গাফিলতির মধ্যে ডুবে থাকো। এভাবে নিজেদের পরিণাম তোমরা নিজেরাই ভোগ করবে।
৫৮.
৫ আয়াতে কাফেরদের যে কথা বলা হয়েছে এটি তার জবাব। সেখানে বলা হয়েছেঃ “এ ব্যক্তি কি সমস্ত খোদার পরিবর্তে একজন খোদা বানিয়েছে? এ তো বড়ই অদ্ভুত কথা।” এর জবাবে বলা হচ্ছে, তোমরা যতই নাক সিটকাওনা কেন, অবশ্যই এটি একটি সত্য, এর সংবাদ আমি তোমাদের দিচ্ছি এবং তোমাদের নাক সিটকাবার ফলে এ সত্য বদলে যেতে পারে না।

এ জবাবে কেবলমাত্র সত্যের বর্ণনাই নেই বরং তার সত্য হবার প্রমাণও এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে। মুশরিকরা বলতো, অনেক উপাস্যের মধ্যে আল্লাহও একজন। তোমরা সমস্ত উপাস্যদেরকে খতম করে দিয়ে একজনকে মাত্র উপাস্য করে নিলে কেমন করে? এর জবাবে বলা হয়েছে, একমাত্র আল্লাহই প্রকৃত উপাস্য ও মাবুদ। কারণ তিনি সবার ওপর আধিপত্য বিস্তারকারী, আকাশ, পৃথিবীর মালিক এবং বিশ্ব-জাহানের সমস্ত জিনিস তাঁর মালিকানাধীন। তাঁকে বাদ দিয়ে এ বিশ্ব-জাহানে যেসব সত্তাকে তোমরা মাবুদ বানিয়ে রেখেছো তাদের মধ্যে কোন একটি সত্তাও এমন নেই, যে তাঁর অধীন ও গোলাম নয়। এসব কর্তৃত্বাধীন ও গোলাম সত্তা সেই সর্বময় কর্তৃত্বকারী ও প্রাধান্য বিস্তারকারী সত্তার কর্তৃত্বে শরীক হতে পারে কেমন করে? কোন্ অধিকারে এদেরকে মাবুদ ও উপাস্য গণ্য করা যেতে পারে?

অনুবাদ: