সা-দ

৮৮ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
আয়াত
-
৮১ ) যার সময় আমি জানি।”
إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْوَقْتِ ٱلْمَعْلُومِ ٨١
৮২ ) সে বললো, “তোমার ইজ্জতের কসম, আমি এদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করবোই,
قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ ٨٢
৮৩ ) তবে একমাত্র যাদেরকে তুমি একনিষ্ঠ করে নিয়েছো তাদেরকে ছাড়া।” ৬৮ বললেন,
إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ ٱلْمُخْلَصِينَ ٨٣
৮৪ ) ৮৪. “তাহলে এটিই সত্য এবং আমি সত্যই বলে থাকি যে,
قَالَ فَٱلْحَقُّ وَٱلْحَقَّ أَقُولُ ٨٤
৮৫ ) আমি তোমাকে ৬৯ এবং এসব লোকদের মধ্য থেকে যারা তোমার আনুগত্য করবে তাদের সবাইকে দিয়ে জাহান্নাম ভরে দেবো।” ৭০
لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنكَ وَمِمَّن تَبِعَكَ مِنْهُمْ أَجْمَعِينَ ٨٥
৮৬ ) (হে নবী!) এদেরকে বলো, আমি এ প্রচার কাজের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাইছি না ৭১ এবং আমি বানোয়াট লোকদের একজনও নই। ৭২
قُلْ مَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَآ أَنَا۠ مِنَ ٱلْمُتَكَلِّفِينَ ٨٦
৮৭ ) এ তো একটি উপদেশ সমস্ত পৃথিবীবাসীর জন্য
إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَٰلَمِينَ ٨٧
৮৮ ) এবং সামান্য সময় অতিবাহিত হবার পরই এ সম্পর্কে তোমরা নিজেরাই জানতে পারবে। ৭৩
وَلَتَعْلَمُنَّ نَبَأَهُۥ بَعْدَ حِينٍۭ ٨٨
৬৮.
এর অর্থ এ নয় যে, “আমি তোমার নির্বাচিত বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবো না।” বরং এর অর্থ হচ্ছে, “তোমার নির্বাচিত বান্দাদের ওপর আমার জারিজুরি খাটবে না।”
৬৯.
“তোমাকে দিয়ে” শব্দের মাধ্যমে কেবলমাত্র ব্যক্তি ইবলিসকেই সম্বোধন করা হয়নি বরং সমগ্র জিন জাতিকে সম্বোধন করা হয়েছে। অর্থাৎ ইবলিস ও তার সমগ্র শয়তান দল যারা তার সাথে মিলে মানুষ জাতিকে গোমরাহ করার কাজে লিপ্ত থাকবে।
৭০.
এ পুরো কাহিনীটি শুনানো হয় কুরাইশ সরদারদের একটি কথার জবাবে। তারা বলেঃ

أَأُنْزِلَ عَلَيْهِ الذِّكْرُ مِنْ بَيْنِنَا

“আমাদের মধ্যে কি এ একজনই লোক রয়ে গিয়েছিল যার ওপর যিকির, নাযিল করা হয়েছে?”

৯ ও ১০ নম্বর আয়াতে যা বলা হয়েছে তাই ছিল এর জবাব। সেখানে বলা হয়েছে, “তোমরা কি আল্লাহর রহমতের ভাণ্ডারের মালিক, তোমরা কি আকাশ ও পৃথিবীর বাদশাহ এবং কাকে আল্লাহ‌ নবী করা হবে ও কাকে করা হবে না এ ফায়সালা করা কি তোমাদের কাজ? ” দ্বিতীয় জবাব এবং এর মধ্যে কুরাইশ সরদারদেরকে যা বলা হয়েছে তা হচ্ছে এই যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মোকাবিলায় ইবলিসের হিংসা ও অহংকারের সাথে মিলে যায়। ইবলিসও আল্লাহ‌ যাকে চান তাকে খলিফা বা প্রতিনিধি করবেন তাঁর এ অধিকার মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল। সে আদমের সামনে মাথা নত করার হুকুম মানেনি এবং তোমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য করার হুকুম মানছো না। তার সাথে তোমাদের এ সামঞ্জস্য কেবলমাত্র এখানেই শেষ হয়ে যাবে না বরং তোমাদের পরিণামও আবার তাই হবে যা তার জন্য নির্ধারিত হয়ে গেছে অর্থাৎ দুনিয়ায় আল্লাহর লানত এবং আখেরাতে জাহান্নামের আগুন।

এ সঙ্গে এ কাহিনীর আওতায় আরো দু’টি কথাও বুঝানো হয়েছে। এক, এ দুনিয়ায় যে মানুষই আল্লাহর নাফরমানি করছে সে আসলে তার সে চিরন্তন শত্রুর ফাঁদে আটকে যাচ্ছে, যে সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই মানবজাতিকে ফুসলিয়ে কুপথে পরিচালনা করার স্থির সিদ্ধান্ত করে রেখেছে। দুই, যে ব্যক্তি অহংকারের কারণে আল্লাহর নাফরমানি করে এবং তারপর নিজের এ নাফরমানি করার নীতির ওপর জিদ ধরে থাকে, আল্লাহর দৃষ্টিতে সে চরম ঘৃণিত। আল্লাহর কাছে এ ধরনের মানুষের কোন ক্ষমা নেই।

৭১.
অর্থাৎ আমি একজন নিস্বার্থ ব্যক্তি। নিজের কোন ব্যক্তিগত স্বার্থে আমি এসব কথা প্রচার করছি না।
৭২.
অর্থাৎ আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই যারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মিথ্যা দাবী নিয়ে ওঠে এবং তারপর প্রকৃতপক্ষে তারা যা নয় তাই হয়ে বসে। একথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ দিয়ে শুধুমাত্র মক্কার কাফেরদেরকে জানিয়ে দেবার জন্য বলা হয়নি বরং কাফেরদের মাঝে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের যে চল্লিশটি বছর অতিক্রান্ত হয়েছিল এর পেছনে তার সবটাই সাক্ষী হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে। মক্কার আবালবৃদ্ধবনিতা একথা জানতো যে, মুহাম্মাদ ﷺ কোন বানোয়াট নবী নন। সমগ্র জাতির মধ্যে কোন এক ব্যক্তিও কখনো তাঁর মুখ থেকে এমন কোন কথা শোনেনি যা থেকে এ সন্দেহ করার অবকাশ হয় যে, তিনি কিছু একটা হতে চান এবং তিনি নিজেকে গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠত করার চিন্তা করছেন।
৭৩.
অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে যারা জীবিত থাকবে তারা কয়েক বছরের মধ্যে স্বচক্ষে দেখে নেবে আমি যা বলছি তা সঠিক প্রমাণিত হবেই। আর যারা মরে যাবে তারা মৃত্যুর দুয়ার অতিক্রম করার পরপরই জানতে পারবে, আমি যা কিছু বলছি তা-ই প্রকৃত সত্য।
অনুবাদ: